ইয়াঙ্গন, মিয়ানমার

সমূদ্রপথ ও বিমানপথে ইয়াঙ্গন মিয়ানমারের প্রবেশদ্বার। নিগুঢ় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের অমোঘ আকর্ষণে এই মহানগর আজকেও সারা বিশ্বের ভ্রমনকারীদের মন জুড়ে আছে। ইয়াঙ্গন নামটির অর্থ হল ‘বিবাদের পরিসমাপ্তি’। ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের কারনে নগরটি স্থাপত্যকলায় চমৎকার মিয়ানমারি নকশার সঙ্গে এজন্যই ব্যাপকভাবে ভিক্টোরীয় যুগের অনুভূতি সমন্বিত দেখা যায়।
এক কথায় বলতে গেলএ অপূর্ব এই শহর। এই নগরের বিখ্যাত কালচারাল মিউজিয়ামে এলে আপনার মাঝে এক অনির্বাচনীয় রাজকিয় অনুভূতির সঞ্চার হবে ঠিক একই কারনে জেড, মুক্তা আর রুবির সংগ্রহসমৃদ্ধ জেমস মিউজিয়াম আপনার জন্য এক অসাধারন বেড়াবার গন্তব্য হতে পারে।

প্রশান্ত হ্রদ, ছায়া সুনিবিড় পার্ক, শ্যামল ক্রান্তীয় বন আর অগণিত জুলজিক্যাল গার্ডেনের জন্য ইয়াঙ্গনকে বলা হয় ‘গার্ডেন সিটি অব দ্য ইস্ট’। পাশাপাশি নগরটিতে ব্যবসায়িক ব্যস্ততারও ঘাটতি নেই। আর ইয়াঙ্গন বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের লগোয়া প্রাকৃতিক দৃশ্যমন্ডিত ইনিয়া লেক ইয়টিং আর ক্রস-দ্য-লেক সাঁতারের জন্য এক আদর্শ গন্তব্য। এখানে এলে আপনার মন প্রশান্ত হয়ে যাবে।

ইয়াঙ্গনে বেড়ানোর কয়েকটি স্পট -

কারাওয়াইক প্রাসাদ

ইয়াঙ্গনের আরেকটি রূপ হল কারাওয়াইক। এখানে এলে পর্যটক এক পরাবাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করবেন। কারাওয়াইক হল ভারতীয় পুরাণের এক জলচর পাখি। দেখে মনে হয় রয়েল লেকের পানিতে পাখীটি বসে আছে। বাস্তবে এটি ৮২ মিটার দীর্ঘ একটি আধুনিক ভাসমান অনুষ্ঠানস্থল। সন্ধ্যাবেলায় যখন এটি আলোয় আলোয় ঝলকে ওঠে তখন মিয়ানমারি ক্লাসিকাল সঙ্গীতের সঙ্গে নাচের পারফরমেন্স দেখার জন্য এখানে বিশাল ভিড় জমে।

ন্যাশনাল মিউজিয়াম
ন্যাশনাল মিউজিয়ামের সংগ্রহের আছে মিয়ানমারের লিপি আর বর্ণমালা থেকে শুরু করে লায়ন থ্রোন রুম, আর রতনাপোন যুগের নিদর্শন। শেষ মিয়ানমারি রাজার মান্দালয় রাজদ- আর জমকালো সিংহাসন এবং আরও কত কী। পাঁচতলা দালানটিতে সব মিলিয়ে ১৪ট হলঘর আছে, অভ্যাগতরা এখানে অমূল্য প্রাচীন নিদর্শন, শিল্পকলা আর ঐতিহাসিক স্মারক দেখতে পারেন।

বজিয়ত অঙ সান বাজার
ইয়াঙ্গনের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত সবচেয়ে ব্যস্ততম বাজার বজিয়ত অঙ সান মার্কেট। এর দোকানগুলোতে কত যে পণ্য পাওয়া যায় তার ইয়াত্তা নেই। এখানকার আবাহ অনেকটা সস্তা পণ্যের পথ-বাজারের মতো যেখানে আপনি পণ্য বিনিময় করতে পারেন। এখানে সবচেয়ে কম দামে পণ্য পেতে হলে সকাল সকাল পৌঁছতে হবে।

স্ট্যান্ড হোটেল
১৯০১ সালে নির্মিত এই হোটেলটিতে থাকার চেয়ে ভাল অভিজ্ঞতা আর হতে পারে না। হোটেলটিতে স্থাপ্ত্যকলায় ভিক্টোরীয় যুগের লালিত্য স্পষ্ট। সেগুন কাঠের মেঝে আর বিলাসবহুল বাথরুমগুলো এক পলকে অভ্যাগতদের মহানগরটির সেই পুরনো দিনগুলোতে নিয়ে যাবে।

মন্তব্যসমূহ