পাহাড়ি শহর চট্টগ্রাম

কিভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে সড়ক, রেল কিংবা আকাশ পথে আসা যায় বন্দর নগরী চট্টগ্রামে। সড়ক পথে দূরত্ব ২৬২ কিমি, বাসে সময় লাগে ৬-৭ ঘন্টা। গ্রীন লাইন, সোহাগ, সিল্ক লাইন, নেপচুন প্রভৃতি কোম্পানির এসি লাক্সারি বাসে চট্টগ্রামে যেতে পারেন, ভাড়া ৩৫০-৪৫০ টাকা। আর নন এসি এস আলম, সৌদিয়া, শ্যামলী, ইউনিজ, ঈগল প্রভৃতি বাসে ভাড়া ১৮০-২০০ টাকা।

কোথায় থাকবেন

চট্টগ্রাম শহরে বিভিন্ন মানের অনেক হোটেল রয়েছে। ১০০-৪০০০ টাকার মধ্যে রুম ভাড়া পেয়ে যাবেন। চট্টগ্রাম শহরের উল্লেখযোগ্য কয়েকটি হোটেল হলো- দক্ষিণ খুলশীতে হোটেল আর্কেডিয়া লি: ফোন-৬৭৪২৪৬, স্টেশন রোডে হোটেল গোল্ডেন ইন চট্টগ্রাম লি: ফোন-৬১১০০৪-৮,  জুবিলী রোডে হোটেল সফিনা, ফোন-৬১৪৩১৭; কোর্ট রোডে হোটেল আটলান্টিক, ফোন-৬২১৪৬০; শেখ মুজিব রোডে হোটেল আনন্দ, ফোন-৭২০৮৫৩;  কেসিদে রোডে হোটেল আল সালেহ, ফোন-৬৩২৫০৯; আগ্রাবাদে হোটেল আগ্রাবাদ, ফোন-৭১৩৩১১-৮; আন্দরকিল্লায় হোটেল শাহীন, ফোন-৬৩৩৭৫১। চট্টগ্রামের এন ডব্লিউ ডি কোড - ০৩১।

দর্শনীয় স্থান

সীতাকুণ্ড, পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত, পারকি সমুদ্র সৈকত, ইকোপার্ক, কৈবল্যধাম, ফয়স লেক, শহীদ জিয়া জাদুঘর, ওয়ার সিমেট্টি, জাতিতাত্ত্বিক যাদুঘর, চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা, বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার, কৈবল্যধাম, চট্টগ্রাম বৌদ্ধ বিহার, বারো আউলিয়ার মাজার, নিঝুম দ্বীপ ইত্যাদি।


পতেঙ্গা

চট্টগ্রাম শহর থেকে প্রায় ২২ কিলোমিটার দূরে আকর্ষণীয় এ পর্যটন স্থান পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত। পতেঙ্গাতেই কর্ণফুলী নদী বঙ্গোপসাগরে মিলিত হয়েছে। পতেঙ্গা সৈকত থেকে দেখা যায় বাংলাদেশে আসা বিভিন্ন দেশের মালবাহী জাহাজ। বন্দর রোড ধরে গেলে নতুন এয়ারপোর্ট এলাকাটিও ঘুরে দেখে আসতে পারেন। এয়ারপোর্টের সামনে কর্ণফুলী নদীর দৃশ্যও অতি মনোরম। চট্টগ্রাম শহর থেকে পতেঙ্গার বেবিট্যাক্সি ভাড়া ১০০ টাকা। বাসে গেলে ভাড়া লাগবে ২০-২৫ টাকা।


মিনি বাংলাদেশ

শহীদ জিয়া স্মৃতি কমপ্লেক্স বা ‘মিনি বাংলাদেশ' বন্দরনগরী চট্টগ্রামের বহদ্দারহাটে অবস্থিত। এটিতে রয়েছে গোটা বাংলাদেশের ঐতিহাসিক স্থানগুলোর ছোট আকারে অবিকল নিদর্শন। আহসান মঞ্জিল, সংসদ ভবন, কার্জন হল কিংবা কান্তজিউ মন্দিরসহ দেশের গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনাসমূহ একইস্থানে তুলে ধরা হয়েছে। এখানে আরও রয়েছে সুউচ্চ ঘূর্ণায়মান হোটেল ও নানা ধরনের এমিউজমেন্ট রাইড। বেলা ১১টা থেকে রাত ৯টা পর্যন্ত পার্কটি সপ্তাহের সাত দিনই খোলা থাকে। পার্কটির বর্তমান প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা। এক মুহূর্তে গোটা বাংলাদেশকে দেখে নেওয়ার জন্য আপনিও ঘুরে আসতে পারেন অন্যরকম ‘মিনি বাংলাদেশ’ থেকে।

বায়েজিদ বোস্তামীর মাজার

এটি নাসিরাবাদের একটি অনুচ্চ পাহারে অবস্থিত। ইরানী সুফি বায়েজিদ বোস্তামীর নামে গড়ে উঠা এই মাজারটি চট্টগ্রামের ভক্তদের পাশাপাশি পর্যটকদের কাছেও একটি আকর্ষনীয় স্থান।
ধারণা করা হয় বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারটা মূলত উনাকে উৎসর্গ করে প্রতিষ্ঠিত একটি প্রতিরূপ মাত্র।

এলাকার জনশ্রূতি অনুযায়ী বায়েজিদ বোস্তামী চট্টগ্রামে এসেছিলেন। চট্টগ্রাম থেকে প্রস্থানকালে ভক্তকূল তাকে এখানে স্থায়ীভাবে থাকার যাবার অনুরোধ করে, সুফি বায়েজিদ ভক্তদের ভক্তিতে মুগ্ধ হয়ে, তাদের কথা রাখতে নিজ আঙ্গুল কেঁটে কয়েক ফোঁটা রক্ত মাটিতে ফেলেন এবং ঐ স্থানে উনার নামে স্মৃতি স্তম্ভ স্থাপনের কথা বলে যান। পবর্তিতে এখানেই বোস্তামীর মাজার গঠিত হয়।

বায়েজিদ বোস্তামীর মাজারের নিকটেই একটি বিশাল পুকুর রয়েছে। এ পুকুরে বিরল প্রজাতির কাছিম ও গজার মাছ আছে। বিপন্নপ্রায় প্রজাতির কাছিম বোস্তামীর মাজার প্রাঙ্গন ব্যতীত বিশ্বের আর কোথাও এদের দেখা মিলে না। বোস্তামী দীঘিতে ১৫০ থেকে ৩৫০টি কচ্ছপ রয়েছে বলে ধারণা করা হয়।

জাতি-তাত্ত্বিক যাদুঘর

এটি চট্টগ্রামের আগ্রাবাদে অবস্থিত। মূলত দেশের বিভিন্ন আধিবাসী গোষ্ঠীর জীবনপ্রণালী ও সংকৃতি  সম্পর্কে দর্শনার্থীদের ধারণা দেওয়ার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত হয়। জাদুঘরের ৩টি গ্যালারীতে ২৫টি উপজাতি গোষ্ঠীর (যেমন: চাকমা, মারমা, তঞ্ছইংগ্যা, মুরাং, সাঁওতাল, গারো, খুমি, মণিপুরী, পালিয়া, টিপরা, হাজং, লুসাই, চাক, সিমুজী এবং বম) নানা রকমের সামগ্রী (যেমন: ফুলদানী, অলঙ্কার, কাপড়, নৌকা, কাঁচি, অস্ত্র, বাঁশের পাইপ) ইত্যাদি প্রদর্শিত রয়েছে। হলরুমের দেয়ালচিত্রের মাধ্যমে উপজাতিদের বিভিন্ন রকম উৎসব ও সংস্কৃতি সম্পর্কেও দর্শনার্থীদের ধারণা দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। রবিবার ও সরকারি ছুটির দিন ব্যতীত প্রতিদিন এই জাদুঘর দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।

মন্তব্যসমূহ