ভিতর বাহির সবই খোলা নাই কিছু ঢাকা, তবু কেন আজব মানুষ নাম রাখিল ঢাকা

ভিতর বাহির সবই খোলা নাই কিছু ঢাকা, তবু কেন আজব মানুষ নাম রাখিল ঢাকা। কথিত আছে, ১২০০ শতকে সেন বংশের রাজা বল্লাল সেন, তার রাজ্যের বুড়িগঙ্গা নদীর তীরবর্তী এলাকার জঙ্গলে হিন্দু দেবী দুর্গার একটি বিগ্রহ খুঁজে পান। অনেকে মনে করেন দেবীর বিগ্রহ গুপ্ত অর্থাৎ ঢাকা অবস্থায় পাওয়া যাওয়ায় রাজা দেবীর প্রতি শ্রদ্ধাস্বরূপ এখনে ঢাকেশ্বরী নামে একটি মন্দির প্রতিষ্ঠা করেন। এবং মন্দিরের নাম থেকে কালক্রমে এলাকার নাম হয় ঢাকা।

ঢাকার প্রধান প্রধান দর্শনীয় স্থান সমূহঃ

জাতীয় সংসদ ভবন
শেরে-বাংলা নগরে অবস্থিত এই জাতীয় পার্লামেন্ট ভবন বিশ্বের অন্যতম সেরা নির্মান স্থাপনা। মার্কিন আর্কিটেকচার লুই কান এর স্থপতি। এর নির্মান কাজ শুরু হয় ১৯৬১ সালে শেষ হয় ১৯৮২। তৎকালীন সময়ে এটির নির্মান ব্যয় হয়েছিল ৩ কোটি ২০ লক্ষ মার্কিন ডলার। ৪ তলা বিশিষ্ট এই ভবনের মূল অধিবেশন কক্ষে ৩৫৪ জন সদস্যর জন্য আসন বিন্যা্স রয়েছে। চার পাশে লেক ব্রেষ্টিত ভবনের উত্তরে একটি উদ্যান রয়েছে।

চন্দ্রিমা উদ্যান
জাতীয় সংসদ ভবনের উত্তর দিকে ক্রিসেন্ট লেক সহ এই উদ্যানটি অত্র এলাকার গনমানুষের অবকাশ কাটানোর একটি উত্তম স্থান। ফার্মগেইট থেকে মিরপুর যাওয়ার পথে বিজয় স্মরনী মোড় নেমে পশ্চিম পাশে চন্দ্রিমা উদ্যানের অবস্থান। প্রতিদিন সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত জনগনের জন্য উন্মোক্ত থাকে। কোন প্রবেশ ফি বা অনুমতি লাগে না।

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার
বাঙালী জাতির চেতনার স্মৃতিচিহ্ন বা আত্মবলিদানের এই মিনার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও মেডিক্যাল কলেজের সন্নিকটেই স্থাপিত। মাতৃভাষা বাংলার দাবিতে ১৯৫২ খ্রীঃ এ অন্দোলনরত নিরস্ত্র ছাত্রদের উপর বর্বরচিত পুলিশের হামলায় নিহত শহীদদের স্মরণে এই মিনার নির্মিত হয়। বিখ্যাত চিত্রশিল্পী হামিদুর রহমান এই মহান শহীদ মিনারের নকশা প্রনয়ন করেন।



জাতীয় স্মৃতিসৌধ
৭১ এ মুক্তিযুদ্ধে নিহত শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে নির্মিত হয় এই জাতীয় স্মৃতিসৌধ। এটি  সাভারের নবীনগরে অবস্থিত। ৮৪ একর আয়তনের প্রাঙ্গণটির মাঝামাঝি স্থানে ১৫০ ফুট উচ্চতার এই মহা্ন সৌধটি নির্মিত। এর সাতটি ধাপ বাংলার মুক্তিকামী আন্দোলনের সাতটি পর্যায় ১৯৫২, ১৯৫৪, ১৯৫৬, ১৯৬২, ১৯৬৬, ১৯৬৯ ও ১৯৭১ -কে নির্দেশ করে। আর্কিটেক্ট সৈয়দ মইনুল হোসেন এর নকশা প্রনয়ন করেন। বিদেশী রাষ্ট্র প্রধানগন বাংলাদেশে সফরকালে স্মৃতিসৌধ প্রাঙ্গনে নিজ হস্তে স্মারক বৃক্ষ রোপন করার একটি রাষ্ট্রাচার প্রচলন রয়েছে। এটি প্রতিদিনই ৯.০০ টা - ৫.০০ টা পর্যন্ত দর্শকদের জন্য খোলা থাকে। মতিঝিল - গুলিস্তান - ফার্মগেইট - গাবতলী থেকে বিআরটিসি সহ বেশ কয়েকটি বাস সার্ভিসে সরাসরি নবীনগর যাতায়াত করা যায়।


জাতীয় শহীদ বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ
ধানমন্ডির পশ্চিমে, বসিলা শহর রক্ষা বাঁধের সাথে রায়েরবাজার বুদ্ধিজীবী স্মৃতিসৌধ -এর অবস্থান। স্থানীয়দের নিকট এটি রায়েরবাজার বধ্য ভূমি হিসেবে পরিচিত। ৭১ এ পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী অসংখ্য বুদ্ধিজীবীদের ধরে এনে এখনে হত্যা করে। ১৯৯৬ সালে দেশের সকল শহীদ বুদ্ধিজীবীদের স্মরনে এই সৌধটি নির্মিত হয়। মোহাম্মদ জামি আল শাফি ও ফরিদউদ্দিন আহমেদ এর স্থপতি।


সোহরাওয়ার্দী উদ্যান
অনেক ঐতিহাসিক ঘটনার স্বাক্ষী এ উদ্যান। ব্রিটিশ শাসনামলে এখানে সামরিক ক্লাব ছিল, প্রতি রবিবার ঘোড়াদৌড় প্রতিযোগিতা হত। তখন স্থানটি ঢাকা রেস কোর্স নামে প্রচলিত ছিল।

এ উদ্যানের দক্ষিণে জাতীয় তিন নেতা-  শের এ বাংলা এ. কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী ও খাজা নাজিমুদ্দিন এর সমাধি অবস্থিত।

১৯৬৯ সালে শেখ মুজিবুর রহমান জেল থেকে মুক্তি পেলে এই রমনা রেইস কোর্সে তাঁকে এক নাগরিক সংবর্ধনা দেওয়া এবং এখানেই তাঁকে বঙ্গবন্ধু উপাধিতে ভূষিত করা হয়। ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ এখানেই বঙ্গবন্ধু তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণ প্রদান করেন।

রমনা রেসকোর্সের মধ্যখানে একটি কালী মন্দির ছিল। নেপাল থেকে আগত দেবী কালীর একজন ভক্ত এই মন্দির নির্মাণ করেন। পরবর্তিতে ভাওয়ালের রানী বিলাসমণি দেবী মন্দিরটির সংস্কার ও উন্নয়ন করেন। পাকিস্তানী হানাদার বাহিনী ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ ভয়াল রাতে মন্দিরের পুজারীসহ বহু বুদ্ধিজীবী হিন্দু ব্যক্তিদের এখানে হত্যা করে এবং মন্দিরটি ধ্বংস করে দেয়। বর্তমানে স্থানীয়দের উদ্দ্যোগে মন্দিরটি পুণঃপ্রতিষ্ঠা কর হয়।

১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পাকিস্তান সেনাবাহিনী মিত্রবাহিনীর কাছে এই স্থানেই আত্মসমর্পণের দলিলে স্বাক্ষর করে।

স্বাধীনতার পর জাতীয় নেতা হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর নামানুসারে রমনা রেসকোর্স ময়দানের নাম পরিবর্তন করে সোহরাওয়ার্দী উদ্যান রাখা হয়। পরবর্তিতে সরকারি উদ্যোগে এখানে প্রচুর গাছ-গাছালি রোপণ করা হয়।


সোহরাওয়ার্দী পাতাল জাদুঘর
মুক্তিযুদ্ধ মন্ত্রণালয়ের তত্ত্বাবধানে নির্মিত এই পাতাল জাদুঘরটি ঐতিহাসিক সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের উত্তর পাশে অবস্থিত। বর্তমানে জাদুঘরে বিনা টিকেটে প্রবেশের ব্যবস্থা রয়েছে। জাদুঘরটিতে মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রামান্য চিত্র, স্থির চিত্র, ঐতিহাসিক দলিল ও নিদর্শনাদি প্রদর্শিত হয়। জাদুঘরটি দর্শনার্থীদের পরিদর্শনের জন্য প্রতিদিন বিকাল ৫.০০টা থেকে সন্ধ্যা ৬.০০টা পর্যন্ত খোলা থাকে। সপ্তাহে দুইদিন শুক্রবার ও শনিবার এবং সকল সরকারী ছুটির দিনে এ জাদুঘরটি বন্ধ থাকে।


বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘর
লেক সার্কাস কলা বাগানের পাশে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর রোডের এ বাড়িতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান দেশ স্বাধীনতার পূর্ব থেকে বসবাস করতেন। সঙ্কটকালে দেশের স্বার্থ সম্পর্কিত বহু রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত হয়েছে এ বাড়িতে। ঘাতকের ষড়যন্ত্রে ১৯৭৫ সালের ১৫ই আগস্ট এ বাড়িতেই তিনি সপরিবারে নিহত হন। ১৯৯৪ সালে তাঁর ও পরিবারের ব্যবহৃত কিছু সামগ্রীর নিয়ে এ ভবনে জাদুঘর স্থাপন করা হয়।

বুধবার জাদুঘরটি বন্ধ থাকে, তাছাড়া সপ্তাহের বাকি ৬ দিন সকাল ১০ টা থেকে সন্ধ্যা ৬ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা, ৩ বছরের কম বয়সীদের কোন টিকেটের প্রয়োজন হয় না। ফোন- ৮৮-০২-৮১১০০৪৬।


জাতীয় জাদুঘর
জাদুঘরটি শাহবাগ মোড়ের সন্নিকটে পিজি হাসপাতাল ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের পাশে অবস্থিত। যাদুঘরে বাঙালির আবাহমান সংস্কৃতি, ঐতিহাসিক প্রত্ন নিদর্শনাদি, জীব প্রকৃতি প্রভৃতি বিষয়ে প্রদর্শনী রয়েছে।
এটি বৃহস্পতিবার ও সরকারি ছুটির দিনে বন্ধ থাকে। সপ্তাহের অন্যান্য দিনে সকাল ১০ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। এবং শুধু শুক্রবার বিকাল ৩ টা - রাত ৮.০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে ।

বিভিন্ন প্রকার সেমিনার বা সঙ্গীতানুষ্ঠানের জন্য জাদুঘরের অডিটোরিয়াম ভাড়া নেওয়ার সুযোগ রয়েছে। সারাদিনের জন্য অডিটোরিয়ামের বড় রুমের ভাড়া ১৪,০০০ টাকা ও ছোট রুমের ভাড়া ৭,০০০ টাকা ।


জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সাথে দেশের মানুষকে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার উদ্দেশ্যে শেরেবাংলা নগর থানার আগারগাঁও ১৯৬৫ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘর। আকাশ পরিস্কার থাকা সাপেক্ষে প্রতি শনি ও রবিবার সন্ধ্যার পর টেলিস্কোপের সাহায্যে দর্শনার্থীদের আকাশ পর্যবেক্ষনের ব্যবস্থা রয়েছে এখানে।

জাদুঘরটি বৃহঃবার, শুক্রবার সহ সকল সরকারী ছুটির দিনে বন্ধ থাকে তাছাড়া সপ্তাহের বাকি দিনগুলো শনি-বুধবার সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত পরিদর্শনের জন্য উন্মুক্ত থাকে। প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা, এখানে গাড়ি পার্ক করার ব্যাবস্থা আছে এবং এর জন্য কোন ফি নেই। জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জাদুঘরের ফোন নম্বরঃ ৯১১২০৮৪ ।


নভো থিয়েটার
২০০৪ সালে প্রতষ্ঠিত নভো থিয়েটারটি তেজগাঁও এর বিজয় সরণিতে অবস্থিত। থিয়েটা্রের ভিতরে তৈরী কৃত্রিম নভোমন্ডল মাধ্যমে দর্শকদেরকে মহাকাশ, গ্রহ, নক্ষত্র সম্পর্কে ধারণা দেওয়া হয়। এখানে শো এর এস্ট্রোভিশন ফ্লিম দেখে আপনি অর্জন করবেন এক অসাধারন অভিজ্ঞতা, আপনা্র মনে হবে খোলা আকাশের নীচে বসে মহাকাশের সমস্ত গ্রহ নক্ষত্র অবলোকন করছেন। স্থপতি আলী ইমাম এই নভো থিয়েটারটির নকশা প্রণয়ন করেন।

প্রদর্শনী শুরু হয় প্রতিদিন বেলা ১১টা, ১টা, ৩টা, বিকেল ৫টা ও সন্ধ্যা ৭টায়। বুধবার ও সরকারি ছুটির দিনে শো বন্ধ থাকে। প্রবেশ মূল্য ৫০ টাকা, প্রদর্শনীর শুরু হওয়ার দুই ঘণ্টা আগে টিকিট বিক্রি শুরু হয়। এ ছাড়া বিজ্ঞানবিষয়ক সভা, সেমিনার, ওয়ার্কশপ, মেলা প্রভৃতির জন্য নভোথিয়েটারের কনফারেন্স রুম ভাড়া দেওয়া হয়। যোগাযোগঃ ৯১৩৮৮৭৮, ৯১৩৯৫৭৭, ৯১৩০০০৬, ০১৫৫২৩৬১৬৭১।


লালবাগের কেল্লা
এটি পুরানো ঢাকার লালবাগে অবস্থিত মোঘল আমলে নির্মিত একটি প্রাচীন নিদর্শন। ১৬৭৮ খ্রিস্টাব্দে মোঘল সম্রাট আওরঙ্গজেব তাঁর ৩য় পুত্র আজম শাহ -কে বাংলার সুবেদার হিসেবে ঢাকায় পাঠান। আজম শাহ সুবেদারের রাজকর্ম ও আবাসিক ব্যাবস্থার জন্য আওরঙ্গবাদ নামে এ দুর্গের নির্মাণ কাজ শুরু করেন। কিছুদিন পরই মারাঠা বিদ্রোহ দমনের জন্য তাকে দিল্লি চলে যেতে হয় এবং দুর্গ নির্মাণের কাজ থেমে যায়।

পরবর্তিতে ১৬৮০ সালে মোগল বাংলার সুবেদার হিসেবে শায়েস্তা খাঁ নিযুক্ত করলে তিনি ঢাকায় এসে ফোর্টের অসমাপ্ত কাজে হাত দেন, কিন্তু ১৬৮৪ খ্রিস্টাব্দে তাঁর প্রিয় কন্যা পরীবিবির অনাকাংখিত মৃত্যুতে শায়েস্তা খাঁ মর্মাহত হয়ে নির্মাণ কাজ স্থগিত রাখেন। শায়েস্তা খান ১৬৮৮ খ্রিস্টাব্দে দ্বায়িত্বকাল শেষে দিল্লি ফিরে গেলে কেল্লার কাজ অসম্পূর্ণই থেকে যায়।
নবাবী আমলের ১৭০৪ সালে বাংলার রাজধানী ঢাকা থেকে মুর্শিদাবাদে স্থানান্তর করা হয়। ফলে ঢাকার গুরুত্ব দিন দিন কমতে থাকে। ১৮৫৩ সালে ঢাকার পুরানা পল্টনের সেনানিবাস স্থানান্তর করে লালবাগে নেয়া হয় এবং দুর্গটি ব্যবহার করা হয়। ১৮৫৭ সাল পর্যন্ত সেনানিবাস এখানে ছিল।

অবশেষে প্রায় ৩০০ বছর পর, আশির দশকে লালবাগ কেল্লা জনসাধারনের পরিদর্শনের জন্য খোলে দেয়া হয়। কেল্লার ভিতরে পরীবিবির সমাধি, একটি মসজিদ ও শায়েস্তা খানের ব্যবহৃত ভবনটি অন্যতম স্থাপনা।

পরিদর্শনের সময়সূচীঃ রবিবার ও সরকারি ছুটির দিনে কেল্লা পরিদর্শন বন্ধ থাকে। সোমবার ১.৩০ থেকে ৫টা ও অন্যান্য দিনে ১০টা থেকে ৫টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে। প্রবেশ ফি ১০ টাকা, বিদেশী পর্যটকদের জন্য ১০০ টাকা। ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের প্রবেশ ফি লাগে না।


আহসান মঞ্জিল
ঢাকার সর্ব দক্ষিনে বুড়িগঙ্গা নদীর তীরে ইসলামপুরে আহসান মঞ্জিলের অবস্থান। এটি ব্রিটিশ  আমলে ঢাকার নওয়াব পরিবারের বাসভবন ছিল। ভবনটি ঢাকার অন্যতম শ্রেষ্ঠ স্থাপত্য নিদর্শন, বর্তমানে জাদুঘর হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছে।

পরিদর্শনের সময়সূচীঃ বৃহস্পতিবার ও সরকারি ছুটির দিনে জাদুঘর বন্ধ থাকে। শুক্রবার দুপুর ২.৩০ টা থেকে সন্ধ্যা ৭.৩০ টা ও অন্যান্য দিনে ১০ টা থেকে ৫ টা পর্যন্ত খোলা থাকে। প্রবেশ মূল্য ৫ টাকা, তবে ছাত্র-ছাত্রীদের বিনা টিকিটে পরিদর্শন করতে দেয়া হয়। জাদুঘর দর্শনার্থীদের জন্য গাইডের ব্যবস্থা আছে, অভ্যর্থনা কক্ষে একত্রিত হলে গাইডগন দর্শকদের নিদর্শন বুঝিয়ে দিয়ে থাকেন।


ঢাকা চিড়িয়াখানা
উনবিংশ শতাব্দীর শেষভাগে ঢাকা শহরের শাহবাগে তৎকালীন নবাবরা একটি ব্যক্তিগত চিড়িয়াখানার গোড়াপত্তন করেন। পঞ্চাশের দশকে ঢাকার সুপ্রিম কোর্টের সামনে বর্তমান ঈদগাহ এলাকায় ছোট আকারে চিড়িয়াখানাটি স্থাপিত হয় এবং ১৯৭৪ সালে এটিকে মিরপুরে স্থানান্তর করা হয়।

যেসব প্রাণী রয়েছে
মিরপুর চিড়িয়াখানাতে সর্বমোট ২০০০ টি প্রাণী রয়েছে। প্রাণীগুলোর মধ্যে রয়েল বেঙ্গল টাইগার, এশীয় সিংহ, চিতা বাঘ, কালো ভাল্লুক, ভারতীয় সিংহ, হাতি, ঘোড়া, গরু, জলহস্তি, রেসাস বানর, গন্ডার, হরিণ, বনরুই, মায়া হরিণ, চিত্রা হরিণ, ভাল্লুক, বানর, সিম্পাঞ্জি, জিরাফ, জেব্রা, উল্লুক, অজগর, কুমির, সজারু, লোনা পানির কুমির,  সবুজ কচ্ছপ, সংকনী সাপ, গোখরা সাপ, সবুজ কেড়া সাপ, ময়না, টিয়া, বক, ময়ূর, সাদা ময়ূর,  চিল, শকুন, শালিক, টিয়া, এমু পাখি, উটপাখি, কানি বক, গো-বক, ফ্লামিংগো, কাও ধনেশ, চিতল ফিস, ফালি ফিস, গোল্ড ফিস, তিমির কঙ্কাল, ডলফিন এবং সৌল ফিস অন্যতম। এছাড়া চিড়িয়াখানার ভিতরে অতিথী পাখি ও মাছের জন্য ২টি লেক রয়েছে।

সময় সূচী
সাপ্তাহিক ছুটি রবিবার, সোম থেকে শনিবার সকাল ৯ টা থেকে বিকেল ৫ টা পর্যন্ত দর্শনার্থীদের জন্য খোলা থাকে।

টিকেট মূল্য
প্রবেশ মূল্য ১০ টাকা, এছাড়া প্রাণী যাদুঘরে প্রবেশ মূল্য ২ টাকা, হাতি আরোহন ৫ টাকা, ঘোড়া  আরোহন ৩ টাকা। শিক্ষা সফরে আগত ছাত্রদের ৫০% থেকে ১০০% পর্যন্ত ছাড় দেয়া হয়।

মাছ ধরার খরচ
একজন লোক একজন সহকারীসহ তিনটি বড়শি দিয়ে মাছ শিকার করতে পারে। সকাল ৬ টা থেকে সন্ধ্যা ৭ টা পর্যন্ত চিড়িয়াখানার লেকে মাছ ধরা যায়। এজন্য জনপ্রতি ১,০০০ টাকা চার্জ দিতে হয়।

পিকনিক স্পট
উৎসব ও নিরিবিলি নামক দুটি পিকনিক স্পট রয়েছে, ভাড়া যথাক্রমে ২,০০০ টাকা ও ১,০০০ টাকা ।

প্রাণী বিক্রয়
বর্তমানে চিড়িয়াখানা থেকে শুধুমাত্র চিহ্নিত হরিন বিক্রি করার অনুমতি দিয়ে থাকে বন বিভাগের প্রধান তত্ত্ববধায়ক। এধরনের প্রতিটি হরিনের মূল্য ১৫,০০০ টাকা।

তথ্য কেন্দ্র
ফোন: ০২- ৯০০২০২০


নন্দন পার্ক
সাভারের নবীনগর-চন্দ্রা হাইওয়ের বাড়ইপাড়া এলাকায় প্রায় ৩৩ একর জমির উপর এই থিম পার্কের অবস্থান। ঢাকার মতিঝিল থেকে এখানে বাসযোগে পৌঁছতে সময় লাগে প্রায় দুই ঘন্টা। হানিফ, সুপার ও আজমেরী বাস সার্ভিস যোগে নন্দনে যাতায়াত করা যায়। থিম পার্কের সামনে প্রায় ১,৫০০ গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যবস্থা রয়েছে।

ছুটির দিন সহ প্রতিদিন সকাল ১০.০০ টা থেকে রাত ৯.০০ টা পর্যন্ত খোলা থাকে।

নন্দন পার্কে প্রবেশ মূল্য ৯০ টাকা। পার্কে প্রবেশ মূল্য ও ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের সমস্ত রাইড ব্যবহার ফি ২৫০ টাকা। পার্কে প্রবেশ মূল্য ও ওয়াটার ওয়ার্ল্ডের ব্যতিত সমস্ত রাইড ব্যবহার ফি ২০০ টাকা। এছাড়া পার্কের ভেতর প্রত্যেকটি রাইডের নিকট টিকেট কাউন্টার রয়েছে। কেউ ইচ্ছে করলে শুধু পার্কের প্রবেশ মূল্য দিয়ে প্রবেশ করার পর ইচ্ছামত রাইডগুলোতে টিকেট কেটে উঠতে পারবে। রাইডগুলোর ফি ১০-৩০ টাকার মধ্যে সীমাবদ্ধ।

নন্দন পার্কটি উদ্বোধনের পর থেকেই বিশেষ দিন যেমন:- স্বাধীনতা দিবস, বিজয় দিবস, ঈদ, পূজা, ১লা বৈশাখ ও বিভিন্ন উপলক্ষ্যে কনসার্টের আয়োজন হয়ে আসছে। তাছড়া কর্পোরেট পিকনিক, সভা /সেমিনার, মিটিং এর আয়োজন করা যায় এখানে।

বুকিং ও অন্যান্য তথ্য জানতে

নন্দন পার্ক লিমিটেডের কর্পোরেট অফিস
৯ এ, সোহরাওয়ার্দী এভিনিউ, বারিধারা, ঢাকা-১২১২।
ফোনঃ ৯৮৯০২৮৩, ৯৮৯০৯২১, ৯৮৯০৯৪৯।

মন্তব্যসমূহ